শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ,রাত ১০:৪৫ মিনিট

Entertainment Unlimited

কারিনা কাপুর

বর্তমান প্রযুক্তির দুনিয়ায় এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার যেমন বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা দিচ্ছে, তেমনই বিতর্কের জন্মও দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। ঠিক তেমনই একটি ঘটনা সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঘটনাস্থল পাকিস্তানের করাচি, আর বিতর্কের কেন্দ্রে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান

সম্প্রতি করাচির এক নাইট পার্টিতে এক ডিজে ইভেন্ট চলাকালীন বড় স্ক্রিনে দেখা যায় কারিনা কাপুরের একটি এআই জেনারেটেড ভিডিও। তাতে দেখা যায়, ডিজে গানের তালে কারিনার মতো দেখতে একটি অ্যানিমেটেড অবয়ব নানা ভঙ্গিমায় নাচছে। উপস্থিত অতিথিরাও সেই নাচ দেখে মেতে ওঠে উল্লাসে। মুহূর্তেই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক এবং টুইটারে।

পাকিস্তানে কারিনা? না, এটা এআই-র কারসাজি!

প্রথমে অনেকেই ভেবেছিলেন, সত্যিই কি কারিনা পাকিস্তানে গিয়েছেন? কিন্তু পরে স্পষ্ট হয়—সেটি আসলে একজন ডিজিটাল ক্রিয়েটরের বানানো একটি AI-generated Animation। ভিডিওর শুরুতে দেখা যায় একটি বার্তা, যেখানে লেখা—”তুমি করাচির এক রেভ পার্টিতে রয়েছো, সামনে নাচছেন কারিনা কাপুর।” এরপরই ভেসে ওঠে সেই ডিজিটাল কারিনা, যিনি নাচ শুরু করেন ডিজে বিটের সঙ্গে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এমন ব্যবহার নিয়ে শুরু বিতর্ক

এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন ভারতের নেটিজেনরা। অনেকেই বলছেন, এটি ভারতীয় সংস্কৃতিকে অপমান করার একটি কৌশল। তাদের মতে, একজন ভারতীয় তারকার এমন বিকৃত উপস্থাপন পাকিস্তানের তরফ থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

তাদের বক্তব্য—”কারিনা কাপুর ভারতীয় সিনেমার এক গর্বের নাম। তাকে এইভাবে বিকৃত করে উপস্থাপন করা অত্যন্ত অপমানজনক। এটা শুধু একজন অভিনেত্রীকে নয়, পুরো ভারতীয় সংস্কৃতিকেই অপমান করা হয়েছে।”

কারিনার এআই রূপ নিয়ে সমালোচনার ঝড়

তবে শুধু ভারতীয়রাই নয়, পাকিস্তানেও কিছু মানুষ এই কাজের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। অনেকে বলেছেন, এই এআই-র উপস্থাপনাটাই ছিল কুৎসিত। কারিনার আসল সৌন্দর্য ও স্টাইল এই অ্যানিমেশন ভিডিওতে অনুপস্থিত।

কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন—”কারিনার মতো একজন আইকনিক অভিনেত্রীকে এইভাবে তুলে ধরা কি ঠিক হলো? AI-এর তো উদ্দেশ্য হওয়া উচিত সৃজনশীলতাকে সমৃদ্ধ করা, অপমান নয়।”

দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন নতুন কিছু নয়। কিন্তু সেই দ্বন্দ্ব কখনো কখনো সংস্কৃতি ও বিনোদনের জগতে এসে পড়লে, তা আরও বেশি আলোড়ন তোলে। দুই দেশের তারকারা একে অপরের দেশে সফর করা থেকে বিরত থাকেন বহু বছর ধরেই।

এরকম পরিস্থিতিতে কারিনার মতো বড় তারকার একটি এআই ভার্সন ব্যবহার করে করাচিতে প্রদর্শন করায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে।

ডিজে ও আয়োজকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ

ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পর বহু ভারতীয় নেটিজেন সোশ্যাল মিডিয়ায় করাচির ওই ডিজে ও ইভেন্ট আয়োজকদের কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন। কেউ বলেছেন—”ক্লিকবেইট আর ভাইরাল হতে গিয়েই একে অপরের সম্মান ভুলে যাচ্ছি আমরা!”

অন্য এক ব্যক্তি লিখেছেন—”যতই AI হোক, এর একটা সীমা থাকা উচিত। এটা যে রকমভাবে করা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট অসম্মান রয়েছে।”

প্রযুক্তি যেন সম্মান হারানোর মাধ্যম না হয়

AI এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে এটিকে ব্যবহার করতে হবে দায়িত্বের সঙ্গে। একজন মানুষের নাম, অবয়ব, গলার স্বর, চলন-বলন—এসব ব্যবহার করার আগে ভাবা উচিত যে তা আদৌ গ্রহণযোগ্য কি না।

কারিনার এই ডিজিটাল রূপ বিতর্কের জন্ম দিলেও, এর মাধ্যমে আবারও সামনে এলো এআই ব্যবহারে নৈতিকতা ও সম্মানের গুরুত্ব।

ভিডিও

উপসংহার

এখনো পর্যন্ত কারিনা কাপুর এই ঘটনাটি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা থেমে নেই। এটি নিঃসন্দেহে আরও একটি উদাহরণ, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সীমাহীন ক্ষমতা যেমন আকর্ষণীয়, তেমনই তা বিতর্কিতও হয়ে উঠতে পারে, যদি তা দায়িত্বহীনভাবে ব্যবহার করা হয়।

NG Videos news এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।