শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ,রাত ১০:৪৭ মিনিট

Entertainment Unlimited

শিল্পা শেঠির ব্যবসা

বলিউডে তারকাদের আয়ের উৎস নিয়ে অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন তারা শুধুই সিনেমা বা বিজ্ঞাপন থেকেই রোজগার করেন। কিন্তু বাস্তবতা একদম ভিন্ন। এখনকার দিনে বেশিরভাগ সেলিব্রেটি নিজেদের ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ব্যবসা বা বিনিয়োগের মাধ্যমে তৈরি করছেন আর্থিক সাম্রাজ্য। এমনই একজন সফল তারকা হলেন বলিউডের ফিটনেস আইকন ও অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি, যিনি অভিনয়ের বাইরেও নিজের ব্যবসায়ী বুদ্ধি দিয়ে কোটিপতির কাতারে পৌঁছে গেছেন।

বিনিয়োগেই বদলে গেল শিল্পার জীবন

শিল্পা শেঠির ব্যবসায়িক সাফল্যের পেছনে রয়েছে দূরদর্শী এক সিদ্ধান্ত। প্রায় আট বছর আগে (২০১৭ সালের আশপাশে), একটি নতুন প্রসাধনী ব্র্যান্ড শিল্পাকে প্রস্তাব দেয় ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ার জন্য। কিন্তু সেই সময় সংস্থার আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তারা শিল্পাকে পারিশ্রমিক দেওয়ার সামর্থ্য রাখত না।

তবে শিল্পার ভিন্ন মানসিকতা ও ব্যবসায়িক দূরদৃষ্টি ছিল বলেই আজ তিনি এক সফল বিনিয়োগকারী। ওই কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি না ভেঙে, বরং তিনি নিজেই প্রস্তাব দেন অংশীদার হওয়ার। অভিনব এই সিদ্ধান্তই আজ তাকে এনে দিয়েছে প্রায় ৫০ কোটি রুপির বেশি মুনাফা!

মাত্র ৬.৭ কোটি টাকার বিনিয়োগ, আয় ৪৫ কোটি!

২০১৮ সালে শিল্পা ওই প্রসাধনী কোম্পানিতে মাত্র ৬.৭ কোটি রুপি বিনিয়োগ করেন এবং বিনিময়ে পান ১৬ লাখ শেয়ার। তখন হয়তো কেউ কল্পনাও করেনি, ভবিষ্যতে এই সিদ্ধান্ত এমন বিপুল মুনাফা এনে দেবে।

সময় গড়াতে থাকে, আর সেই সংস্থাটি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। ২০২৩ সালে সংস্থাটি বাজারে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে তোলে। সে বছর শিল্পা তার ১৩.৯৩ লাখ শেয়ার বিক্রি করে লাভ করেন প্রায় ৪৫ কোটি ১৩ লাখ রুপি

এখনো রয়েছে কোটি টাকার শেয়ার

২০২৫ সালের এপ্রিলে সেই সংস্থার শেয়ারের মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৩৬ রুপি প্রতি শেয়ার। এখনো শিল্পা শেঠির কাছে রয়েছে ২.৩ লাখ শেয়ার। যার বাজারমূল্য প্রায় ৫ কোটি ৪২ লাখ রুপি! অর্থাৎ, তিনি এখনো কোম্পানির একজন গুরুত্বপূর্ণ শেয়ারহোল্ডার।

এই পুরো যাত্রাটিতে দেখা যায়, কীভাবে একজন সেলিব্রেটি শুধুমাত্র তার পরিচিতির ওপর নির্ভর না করে, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আর্থিক দিক থেকেও দারুণ সফল হতে পারেন।

সফলতার পিছনে শিল্পার দূরদর্শিতা ও বিশ্বাস

শিল্পা শেঠির এই সাফল্যের মূল কারণ হচ্ছে তার আত্মবিশ্বাস ও ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা। যখন অনেকেই হয়তো সেই প্রস্তাবকে এড়িয়ে যেতেন, শিল্পা সেখানে নিজের বিশ্বাস রেখেছিলেন ব্র্যান্ডটির ওপর এবং বিনিয়োগ করেছিলেন নিজের অর্থ।

এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন, শুধু স্টারডম নয়, প্রয়োজন হয় বাস্তব বুদ্ধি, ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণের ক্ষমতা।

কোটিপতির তালিকায় নিজের জায়গা পাকা

শুধু সিনেমা দিয়েই নয়, এই বিনিয়োগের সুবাদে শিল্পা এখন বলিউডের কোটিপতি তারকাদের তালিকায় অন্যতম একজন। তার স্বামী রাজ কুন্দ্রাও একজন সফল ব্যবসায়ী। তবে শিল্পা শেঠি নিজের পরিচয়ে এবং নিজের সিদ্ধান্তেই এখন আর্থিকভাবে যথেষ্ট স্বনির্ভর।

আর্থিক সাফল্য ছাড়াও আরও অনেক উদ্যোগ

শিল্পা শুধু এই একটি কোম্পানিতেই বিনিয়োগ করেননি। তার আরও কিছু উদ্যোগ রয়েছে—যেমন ফিটনেস অ্যাপ, হেলদি ফুড চেইন, যোগব্যায়ামভিত্তিক অনলাইন প্রোগ্রাম ইত্যাদি। এসবের মাধ্যমেও তিনি নিরবিচারে আয় করে যাচ্ছেন।

অনুপ্রেরণা যেকোনো নারীর জন্য

শিল্পা শেঠির এই গল্প আজকের তরুণ প্রজন্ম এবং বিশেষ করে নারীদের জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা। তিনি দেখিয়েছেন—নিজের নাম, পরিচিতি এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া যায়।

শেষ কথা

শিল্পা শেঠির এই অনন্য সাফল্য আমাদের শেখায়—অভিনয় হোক বা অন্য কোনো ক্ষেত্র, সাফল্যের চাবিকাঠি হলো নিজের উপর বিশ্বাস, সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত এবং ঝুঁকি নেওয়ার সাহস। অভিনয়ের বাইরেও যে একজন সেলিব্রিটি কত বড় আর্থিক সাফল্য পেতে পারেন, তার সবচেয়ে বাস্তব উদাহরণ হয়ে থাকবেন তিনি।

আরো পড়ুন …

ইসলাম অবমাননার অভিযোগে “জি বাংলার” বিরুদ্ধে মামলা:ইশক সুবহান আল্লা’ নিয়ে তীব্র বিতর্ক

নুসরাত ফারিয়া ছবি ভাইরাল! সাহসী রূপে ঝড় তুললেন সোশ্যাল মিডিয়ায়

“আমি জানি আমি কে”—বাঁধনের আত্মজ্ঞান, নীরবতা আর সাহসী পথচলার গল্প-2025

সুচিত্রা সেনের দেখা পেতে মণীষা কৈরালার অবিশ্বাস্য কাণ্ড!

NG Videos news এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।