NG Videos News

Entertainment Unlimited

বুধবার ৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

NG Videos News

Entertainment Unlimited

বুধবার ৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাই লিল ব্ল্যাক

জাপানের জনপ্রিয় প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্র তারকা কাই আসাকুরা, যিনি রাই লিল ব্ল্যাক “Rae Lil Black” নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিত, সম্প্রতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। ২০২৫ সালের রমজান মাসে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন এবং মালয়েশিয়ার একটি মসজিদে তাকে দেখা গেছে।

২.২ মিলিয়নের বেশি ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ারের এই তারকা ফেব্রুয়ারি মাসে ভক্তদের কাছে জানান, বছরের পর বছর ধরে “হারিয়ে যাওয়া” অনুভূতির পর তিনি একটি নতুন ধর্মীয় পথ খুঁজে পেয়েছেন। তার এই যাত্রা শুধু তার জীবনেই নয়, ভক্তদের মনেও নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

রমজানে প্রথম ইফতার: নতুন শুরু

২০২৫ সালের ২ মার্চ রাই লিল ব্ল্যাক সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করেন। ক্যাপশনে লেখেন, “আমার জীবনের প্রথম ইফতারে শুভেচ্ছা!” ইফতার হলো রমজান মাসে মুসলিমদের সূর্যাস্তের পর রোজা ভাঙার খাবার। ভিডিওতে তাকে একটি সাধারণ কালো হিজাব পরে খাবার খেতে দেখা যায়। এই মুহূর্তটি তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে চিহ্নিত হয়।

রাই লিল ব্ল্যাক

মালয়েশিয়ার সফর: ইসলামের দিকে প্রথম পদক্ষেপ

২০২৪ সালের অক্টোবরে মালয়েশিয়া সফরের সময় রাইয়ের জীবনে এই পরিবর্তনের বীজ বপন হয়। মালয়েশিয়া, যেখানে অধিকাংশ মানুষ মুসলিম, সেখানে তিনি স্থানীয়দের ধর্মীয় জীবনযাপন ও সংস্কৃতি দেখে মুগ্ধ হন। তিনি বলেন, “আমাকে খোলা হৃদয়ে স্বাগত জানানো হয়েছিল।” এই অভিজ্ঞতা তাকে ইসলাম সম্পর্কে আরও জানতে উৎসাহিত করে।

রাই লিল ব্ল্যাক

সিঙ্গাপুরের পডকাস্টার জার ইসমাইলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার ধর্মান্তরের গল্প খুলে বলেন। কুয়ালালামপুরের মসজিদগুলোতে গিয়ে তিনি ইসলাম সম্পর্কে জানার চেষ্টা শুরু করেন। তিনি বলেন, “আমি ধর্ম সম্পর্কে আরও বোঝার জন্য মসজিদে গিয়েছিলাম।” সেখানে স্থানীয়দের সাহায্য এবং ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে তিনি নামাজ শিখতে শুরু করেন। অনেক চেষ্টার পর তিনি এখন দিনে পাঁচবার নামাজ পড়েন।

নামাজে শান্তি: আধ্যাত্মিক জাগরণ

রাই বলেন, “আমি নামাজ পড়তে শুরু করি কারণ আমি কোনো বড় ও শক্তিশালী শক্তির কাছ থেকে সাহায্য চেয়েছিলাম। নামাজের পর আমার মন হালকা লাগে, চিন্তা কমে যায়।” এই আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা তাকে জীবনের নতুন দিক দেখিয়েছে। তিনি মনে করেন, নিয়মিত নামাজ তার জীবনে শান্তি এনেছে।

সমালোচনা ও সমর্থন: ভক্তদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ইসলাম গ্রহণের ঘোষণার পর রাইকে নানা প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সিদ্ধান্তের পর তার প্রায় ১০ লাখ ফলোয়ার কমে গেছে। তবে তিনি এতে ভেঙে পড়েননি। তিনি বলেন, “আমার নতুন বিশ্বাস আমাকে পরিবারের কাছাকাছি এনেছে। আগে বছরে দুবার বাবার সঙ্গে কথা হতো, এখন আমি বাবা-মায়ের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলি।”

তার পূর্বের পেশা নিয়ে অনেকে সমালোচনা করলেও, তিনি এটাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, গত পাঁচ বছর ধরে তিনি তার ক্যারিয়ারে মনোযোগ দেননি। তার পুরোনো কিছু ভিডিও এখনও প্রকাশিত হতে পারে, যা তার পূর্বের প্রযোজনা কোম্পানির সিদ্ধান্ত। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “এটি দেখে মনে হতে পারে আমি এখনও সক্রিয়, কিন্তু আমি আর তা নই।”

হারানো থেকে খুঁজে পাওয়া: জীবনের নতুন অর্থ

রাই লিল ব্ল্যাক বলেন, গত কয়েক বছর তিনি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন।

তিনি যদিও খ্যাতি ও অর্থের দিক থেকে সফল ছিলেন, তবু তার মনে একটা শূন্যতা ছিল। ধর্মের মাধ্যমে তিনি জীবনের নতুন অর্থ খুঁজে পেয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু এখন সঠিক পথে ফিরে এসেছি।”

মালয়েশিয়ার প্রভাব: একটি জীবন পরিবর্তনের সূচনা

মালয়েশিয়ার সফর রাইয়ের জীবনে একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে। সেখানকার মানুষের আতিথেয়তা, ধর্মীয় পরিবেশ এবং সংস্কৃতি তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তিনি মসজিদে গিয়ে যে শান্তি অনুভব করেন, তা তাকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করে। এরপর তিনি কোরআন পড়া এবং ইসলামী বক্তৃতা শোনা শুরু করেন।

সামাজিক মাধ্যমে নতুন যাত্রা

রাই তার সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত নতুন জীবনের আপডেট দিচ্ছেন। রমজানে রোজা রাখা, ইফতারের মুহূর্ত এবং নামাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিচ্ছেন তিনি। তার ভক্তদের একাংশ এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানালেও, কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তবে রাই তার পথে অটল। তিনি বলেন, “আমার বিশ্বাস আমার শক্তি।”

সমালোচকদের জবাব

তার পূর্বের পেশার কারণে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে রাই স্পষ্ট করে বলেন, “আমি এখন আর সেই জীবনে নেই। আমার অতীত আমার বর্তমান নয়।” তিনি ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, “আমার পথে চলতে আমাকে সমর্থন করুন, সমালোচনা নয়।”

পরিবারের সঙ্গে নতুন বন্ধন

ইসলাম গ্রহণের পর রাইয়ের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। তিনি বলেন, “আগে আমি পরিবার থেকে দূরে ছিলাম। এখন আমরা একে অপরের কাছাকাছি এসেছি।” এই পরিবর্তন তার জীবনে নতুন আনন্দ এনেছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

রাই এখন তার আধ্যাত্মিক জীবনে মনোযোগ দিতে চান। তিনি বলেন, “আমি আর অতীতের দিকে ফিরে তাকাতে চাই না। আমার লক্ষ্য এখন শান্তি ও বিশ্বাসের পথে এগিয়ে যাওয়া।” তিনি ভবিষ্যতে ইসলাম সম্পর্কে আরও শিখতে এবং অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে চান।

শেষ কথা

রাই লিল ব্ল্যাকের এই যাত্রা প্রমাণ করে, জীবনের যেকোনো মোড়ে পরিবর্তন সম্ভব। তার অতীত যাই হোক না কেন, তিনি এখন একটি নতুন জীবনের সন্ধানে। তার গল্প অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। রাইয়ের এই নতুন অধ্যায় তাকে শুধু শান্তিই দেয়নি, তার জীবনকে নতুন অর্থে ভরিয়ে তুলেছে।

NG Videos news এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।